রবিবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৫

মনপুরা (প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলা ভূমি)

বাংলাদেশের বৃহওম দ্বীপ ভোলা জেলার মুল ভুখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন রূপালী দ্বীপ মনপুরা। রাক্ষুসে মেঘনার কোলে লালিত চর্তুদিকে মেঘনা নদীবেষ্টিত সবুজ শ্যামল ঘেরা অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি মনপুরা। সু বিশাল নদী-নালা ,চতুর্দিকে বেড়ীবাঁধ, বিভিন্ন ধরনের ধানের ক্ষেত, বিশাল ম্যানগ্রোভ প্রজাতির গাছের বাগনে সমৃদ্ব। মনপুরা উপজেলা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের কাছে যেমন আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় জায়গা তেমনি বিদেশীদের কাছেও। যেসব জেলার বা বিভাগের লোকজন মনপুরা ভ্রমনে বা কাজের জন্য এসেছেন বা অবস্থান করেছেন এখানকার মানুষকে দেখে মুগ্ধ হয়েছেন এবং ভালবেসেছেন। এখানে না আসলে বোঝাই যাবেনা সবুজের দ্বীপ মনপুরায় কি সৌন্দর্য লুকায়িত আছে। পর্যটনের কি অপার সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে পুরানো এ দ্বীপে। পর্যটক আর ভ্রমন পিপাসু মানুষকে মুগ্ধতার বন্ধনে আটকে দেওয়ার বহু উপকরন রয়েছে এ দ্বীপে । এখানে সকাল বেলার সুর্য যেমন হাঁসতে হাঁসতে পুর্বদিকে ডিমের লাল কুসুমের মত উদিত হতে দেখা যায়, তেমনি বিকেল বেলাতেও আকাশের সিঁড়ি বেয়ে লাল আভা ছড়াতে ছড়াতে পশ্চিম আকাশে মুখ লুকায়। মনপুরাতে এসেই কেবল সুর্যোদয় ও সুর্যাস্ত প্রত্যক্ষ করা যায়।

এই ডক এ যা আছেঃ

১. ঢাকা থেকে কিভাবে যাওয়া যায়?
২. লঞ্চে গেলে কিভাবে ? লঞ্চ ছাড়ার ডিটেইল সময়সূচি
৩. যাতায়াত ভাড়া কেমন পরবে?
৪. কোন ঋতুতে গেলে কি কি সুবিধা/অসুবিধা?
৫. রাতে থাকার ব্যবস্থা কোথায়,কিভাবে, খরচ?
৬. খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা আর খরচ?
৭. দর্শনীয় স্থান গুলোর লিস্ট
৮. ক্যাম্পিং এর সুবিধা আছে কি নাই?
৯. কি কি জিনিস সাথে নেয়া প্রয়োজন?
১০. টিপস ...।

এ ছাড়া আর যা যা প্রয়োজনীয় ইনফো আপনার কাছে আছে প্লিজ কমেন্ট করুন। সেই অনুযায়ী ডক টা আপডেট করা হবে।
ঢাকা থেকে মনপুরা যাওয়ার জন্য সদরঘাট থেকে সরাসরি লঞ্চ এ যাওয়াটাই বেশি উপভোগ্য এবং কম ঝামেলাপূর্ণ।

ঢাকার সদরঘাট থেকে যেতে হবে - ঢাকা থেকে মনপুরা যাওয়ার জন্য প্রতিদিন ২ টা লঞ্চ বরাদ্দ রয়েছে – ৪ টা লঞ্চ রোটেশন পদ্ধতিতে ডেইলি ২ টা করে ছেড়ে যায়, প্রতিদিন বিকাল ৫.৩০ মিনিট ও সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিট, লঞ্চ ১ মিনিট ও লেট করে না, বি কেয়ার ফুল।

বিকাল ৫.৩০ টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে যায় "এম.ভি ফারহান - ৩" অথবা "এম.ভি ফারহান - ৪" এর মধ্যে যে কোন ১ টা। দুইটাই লাক্সারিয়াস লঞ্চ । এদের মধ্যে প্রতিদিন ১টা করে লঞ্চ হাতিয়ার উদ্দেশ্যে সদরঘাট থেকে বিকেল সাড়ে ৫ টায় ছেড়ে যায়।

সেটি কালিগঞ্জ (মেহেন্দীগঞ্জ) - বিশ্বরোড (ভোলা) - দৌলত খাঁ (ভোলা) - মির্জাকালু - শরাশগঞ্জ - ভোলা তজুমুদ্দিন - মনপুরা (রামনেওয়াজ লঞ্চ ঘাট) পৌঁছবে পরদিন সকাল ৬-৭ টায়।

আপনাকে নামতে হবে মনপুরা (রামনেওয়াজ লঞ্চ ঘাট)।

(ঢাকায় ফেরত যাবার লঞ্চ ছাড়ে দুপুর ২ টায়)

এম.ভি ফারহান ৩- ০১৭৮৫৬৩০৩৬৬।
এম.ভি ফারহান ৪- ০১৭৮৫৬৩০৩৬৮, ০১৭৮৫৬৩০৩৬৯, ০১৭৮৫৬৩০৩৭০।

** কোন কারনে ফারহান ৩/৪ লঞ্চ মিস করলে বিকাল ৬.৩০ মিনিট এ সম্পূর্ণ নতুন ভাবে চালু করা এম ভি টিপু-৫ অথবা এম ভি পানামা লঞ্চ এ করে মনপুরা নামতে পারবেন। এই লঞ্চ দুটো এই রুটে চলেঃ

  ঢাকা - চাঁদপুর - কালিগঞ্জ (মেহেন্দীগঞ্জ) - বিশ্বরোড (ভোলা) - দৌলত খাঁ (ভোলা) - মির্জাকালু - শরাশগঞ্জ - ভোলা তজুমুদ্দিন - মনপুরা (রামনেওয়াজ লঞ্চ ঘাট) ও মনপুরা হাজির হাট লঞ্চ ঘাট।

আপনাকে নামতে হবে মনপুরা (রামনেওয়াজ লঞ্চ ঘাট) অথবা মনপুরা (হাজির হাট লঞ্চ ঘাট)। হাজির হাট নামলে সুবিধা বেশি।

বিশেষ কারনে যদি এই দুটো অর্থাৎ টিপু -৫ বা পানামা লঞ্চ ও মিস করেন বিকাল ৬.৩০ মিনিট (তবে এরা ছাড়তে একটু লেট করে সদরঘাট এ খুজে দেখুন ৬.৪৫ এর আগে ছাড়ে না) এম ভি ফারহান - ৬ অথবা ফারহান - ৭ লঞ্চ এ করে তজুমুদ্দিন গিয়ে ফারহান - ৩/৪ লঞ্চ ধরতে পারবেন অথবা তজুমুদ্দিন থেকে ট্রলার এ মনপুরা যেতে পারবেন।

 এম ভি ফারহান - ৬ অথবা ফারহান - ৭ লঞ্চ দুটো এই রুটে চলেঃ

ঢাকা - ফতুল্লা - কালিগঞ্জ (মেহেন্দীগঞ্জ) - বিশ্বরোড (ভোলা) - দৌলত খাঁ (ভোলা) - মির্জাকালু - শরাশগঞ্জ - ভোলা তজুমুদ্দিন - শরশী সী-ট্রাক ঘাট - মঙ্গল শিকদার - বেতুয়া (চরফ্যাশন)।

আপনাকে নামতে হবে তজুমুদ্দিন লঞ্চ ঘাট তজুমুদ্দিন এ নেমে পড়বেন ভোর ৪ টার দিকে। তারপর ট্রলারে ১ ঘণ্টা পথ পাড়ি দিয়ে মনপুরা যাবেন। বোনাস হবে তজুমুদ্দিন দর্শন।

৬ টা লঞ্চই একি মালিকের লঞ্চ। যে কোন নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।

লঞ্চে গেলে ভাড়া পড়বে- ডেকে ৩০০ টাকা, ২০০ টাকা দিয়াও যাওয়া যায়। কেবিন সিঙ্গেল- ১২০০ টাকা, ডাবল-২২০০ টাকা, ভিআইপি - ভাড়া জানা নাই।

লঞ্চ থেকে নামার পরঃ

রাম্নেওয়াজ ঘাট এ নামলে আপনাকে হোটেল বা আবাসন এর জন্য আপনাকে মটরসাইকেল/ ভ্যান এ যেতে হবে। মটরসাইকেল ভাড়া ১০০ টাকার মত।

কোন ঋতুতে গেলে কি কি সুবিধা/অসুবিধাঃ

অক্টোবর থেকে এপ্রিল ১৫ তারিখ এখনকার আবহাওয়া অনুযায়ী মনপুরা ভ্রমনের জন্য বেস্ট। অন্য সময় বর্ষা থাকে ও ঝড়ের কারনে মেঘনা নদী ও সাগর উত্তাল থাকে। তবে বর্ষার পর পরই মনপুরা ভ্রমণের জন্য বেস্ট। হরিন দেখা যায় এ সময় প্রচুর।

থাকার ব্যবস্থাঃ

ক্যাম্পিং করার জন্য আদর্শ জায়গা মনপুরা। চোর ডাকাতের বালাই নেই। আছে আদিগন্ত বেলা ভূমি। একটা ভালো জায়গা দেখে তাবু ফেলে নিন। পড়শীদের সাথে রফা করে রান্নার আয়োজন করতে পারবেন। আর যাদের তাবু নেই তারা নীচের হোটেল / বাংলো তে থাকতে পারেন (সাধারন মান)।

- হোটেল দ্বীপ : ০১৭১-৩৯৬৫১০৬
- প্রেস ক্লাব গেষ্ট হাউস : ০১৯১-৩৯২৭৭০৬
- হোটেল আইল্যান্ডঃ সদর রোড, হাজিরহাট বাজার মনপুরা, ভোলা – ০১৭১১৭০১২৮৬
- কারিতাস হোটেলঃ হাজিরহাট বাজারের দক্ষিন পাশে মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠের সাথে = অবস্থিত। ০১৯২৩৩৭৬৩৬৫
- পানি উন্নয়ন বোর্ড ডাকবাংলোঃ উপজেলা সদরের হাজিরহাট বাজারের দক্ষিন পাশ্বে আবাসিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সামনে অবস্থিত – ০১৯২৩৩৭৬৩৬৫
- জেলা পরিষদ ডাকবাংলোঃ উপজেলা সদরের বাঁধের হাটের সরকারী দিঘীর পাশে জেলা পরিষদ ডাকবাংলোটি অবস্থিত। : ০১৯৩৪১৭৫৩৬৯

এছাড়া চোধুরী সাহেবের বাংলো সহ আরো অনেক থাকার বোর্ডিং বা হোটেল আছে। দরদাম করে থাকতে পারবেন।

খাবার দাবারঃ

খাবার দাবার বেশি একটা ভালো পাবেন, সামুদ্রিক মাছ, মাংস, মোটা চালের ভাত, রুটি সব ই পাবেন, এখানে খাবারের রীতিমত আইটেম ছাড়াও বিশেষ বিশেষ কিছু খাবার না খেলে আপনার মনপুরা যাওয়া বৃথা, শীতের হাঁস, মহিষের কাচা দধি, টাটকা ইলিশ, বড় কই, মাগুর, কোরাল, বোয়াল ও গলদা চিংড়ি। মেঘনা নদী থেকে ধরে আনা টাটকা ইলিশ ও চর থেকে আনা কাঁচা দুধের স্বাদই আলাদা।


কি করে ঘুরবেন :

বেষ্ট সল্যুশন একটা মোটার সাইকেল ভাড়া করা। চালকই সব ঘুরে দেখাবেন আপনাকে। সারাদিনের জন্য হাজার দেড়েক টাকা নেবে। আমি আমার মোটর সাইকেল ড্রাইভারের নম্বর দিলাম। নাম নয়ন, ফোন- ০১৭৬-৪৬৮৬৭৮২।



আরো কিছু জানতে হলে আমাকে ইনবক্স করতে পারেন।
https://www.facebook.com/zahidibnejahan


এই ডক টি প্রথম লিখেছিলেনঃ এই গ্রুপের সম্মানিত Md Shariful Islam ভাই।

সম্প্রতি ডক টা আপডেট করা হলো। দর্শনীয় স্থান গুলোর লিস্ট  আপডেট করা হবে ২/১ দিনের মাঝেই। ডক টা এখনো অসম্পূর্ণ।


সুত্র: অভিজ্ঞতা, ইন্টারনেট।

বিশেষ কৃতজ্ঞতা: মাহমুদ ভাই, বেড়াই বাংলাদেশ।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 

Blogger news

Blogroll

About